ডেস্ক নিউজ : করোনা ভাইরাস মহামারিতে দেশের সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগে আগামী রোববার (১৯ জুলাই) থেকে সপ্তাহের সব কার্যদিবসে ভার্চ্যুয়ালি বিচার কাজ চলবে। এর আগে গত ১২ মার্চের পর ১৩ জুলাই মহামারির মধ্যে প্রথমবার ভার্চ্যুয়াল আপিল বিভাগ বসেছিল। তখন সিদ্ধান্ত ছিল সপ্তাহে শুধুমাত্র দু’দিন বসবে। এরমধ্যে গত ১৪ জুলাই সিদ্ধান্ত আসে সপ্তাহে সব কার্যদিবস অর্থাৎ রোববার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিচার কাজ পরিচালনা করার।
শনিবার (১৮ জুলাই) এ বিষয়ে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে আপিল বিভাগ।
এতে আরও বলা হয়, ‘আপিল বিভাগের ভার্চ্যুয়াল কোর্টে আগামী ১৯ জুলাই থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সপ্তাহের রোববার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত শুনানি হবে। ওই দিনগুলোতে সুপ্রিম কোর্টের দৈনন্দিন নিয়মিত স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে।’
এতে আরও বলা হয়, ‘আপিল বিভাগের ভার্চ্যুয়াল কোর্টে জরুরি বিষয়ে শুনানি সংক্রান্ত মামলার দৈনন্দিন কার্যতালিকা (কজলিস্ট) যথারীতি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। ভার্চ্যুয়াল (মিটিং) শুনানি সংক্রান্ত যোগাযোগ ই-মেইল থেকে জানা যাবে।’
সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক আগামী ১৯ জুলাই থেকে এটি শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র ও হাইকোর্ট বিভাগের স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।
চলতি বছরের গত ১২ মার্চের পর সুপ্রিম কোর্টে অবকাশকালীন ছুটি শুরু হয়। এরমধ্যে গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ শুরু ছুটি হওয়ায় আদালতও বন্ধ হয়ে যায়।
গত ২৬ এপ্রিল ভার্চ্যুয়াল কোর্ট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। এজন্য সুপ্রিম কোর্টের রুলস কমিটি পুনরায় গঠন ও ভার্চ্যুয়াল কোর্ট চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় আইনি প্রতিবন্ধকতা দূর করতে পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
সেদিন প্রথমবারের মতো ভিডিও কনফারেন্সে প্রধান বিচারপতির সভাপতিত্বে ফুলকোর্ট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কনফারেন্সে সংযুক্ত ছিলেন সুপ্রিমকোর্টের উভয় বিভাগের ৮৮ জন বিচারপতি।
এ অবস্থায় গত ৭ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গণভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘আদালতে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।
দু’দিন পর গত ৯ মে ভার্চ্যুয়াল কোর্ট সম্পর্কিত অধ্যাদেশ জারি করা হয়। অধ্যাদেশে বলা হয়, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বা ক্ষেতমত হাইকোর্ট বিভাগ, সময়, প্র্যাকটিস নির্দেশনা (বিশেষ বা সাধারণ) জারি করতে পারবে।
পরে গত ১০ মে ভিডিও কনফারেন্সে সব বিচারপতিদের সঙ্গে বৈঠকের পর (ফুলকোর্ট) ভার্চ্যুয়াল কোর্ট চালুর সিদ্ধান্ত হয়। ওই অধ্যাদেশের পর নিম্ন আদালত, হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে ভার্চ্যুয়াল বিচার কাজ চলে। পরে গত ৮ জুলাই বিলটি সংসদে পাস হয়।
গত ১২ জুলাই আপিল বিভাগের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সপ্তাহে দু’দিন (সোম ও বৃহস্পতিবার) ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে আপিল বিভাগের বিচার কাজ চলবে। সে অনুসারে প্রথমবারের মতো গত সোমবার (১৩ জুলাই) ভার্চ্যুয়ালি বসেছিলেন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ।
পরদিন গত ১৪ জুলাই আরেকটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে আপিল বিভাগ। এতে বলা হয়, ‘প্রধান বিচারপতি দেশব্যাপী করোনা সংক্রমণ রোধকল্পে এবং শারীরিক উপস্থিতি ছাড়া আদালত তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার আইন, ২০২০ (২০২০ সনের ১১ নম্বর আইন) ও অত্র কোর্ট প্রণীত প্র্যাকটিস ডাইরেকশন অনুসরণ করে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে শুধু ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতিতে আপিল বিভাগের ভার্চ্যুয়াল কোর্টের মাধ্যমে স্বাভাবিক বিচারকার্য পরিচালিত হবে মর্মে অনুমাদন দিয়েছেন।